Announcement: |
আমরা বিশ্বাস করি, আর্থিক সীমাবদ্ধতা কখনোই কারও স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো উচিত নয়।
এই বিশ্বাস থেকেই আমাদের বিদ্যালয় একাধিক শিক্ষার্থীকে নীরবে, আন্তরিকভাবে সহায়তা করে এসেছে — কখনও বেতনে ছাড় দিয়ে, কখনও পুরোপুরি বিনামূল্যে শিক্ষার সুযোগ দিয়ে।
আজ তারা কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে, কেউ কলেজে, আবার কেউ এখনো আমাদেরই মাঝে, ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুকে ধারণ করে এগিয়ে চলেছে।
তাদের সম্মানার্থে আমরা এই কর্ণারে কিছু গল্প উপস্থাপন করছি রূপক নামে — যেন আপনারাও অনুপ্রাণিত হতে পারেন, আর তারা থেকেও যায় নীরব নায়ক হয়ে।
একসময় তাঁর হাতে ছিল না বই কেনার টাকা, স্কুল ড্রেস ছিল পরনের বাইরে। কিন্তু তাঁর চোখে ছিল স্বপ্নের দীপ্তি। বিদ্যালয়ের আর্থিক সহায়তায় সে নিয়মিত ক্লাস করতে পেরেছে। আজ ‘আলোর দীপ্তি’ একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞানে অধ্যয়ন করছে। সে বিশ্বাস করে, শিক্ষা দিয়েই পরিবর্তন সম্ভব — আর সেই যাত্রায় প্রথম সিঁড়িটি ছিল এই বিদ্যালয়ের সহানুভূতি।
‘নিশিথের জ্যোতি’ একটি শ্রমজীবী পরিবারের সন্তান। ক্লাসে সব সময় চুপচাপ, কিন্তু পরীক্ষায় বরাবর সেরা। বেতনের টাকাটা ছিল পরিবারের পক্ষেই অসম্ভব। বিদ্যালয় তাকে ফুল ফ্রিতে পড়ার সুযোগ দিয়েছে, আর আজ সে একটি নামী কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করছে। ভবিষ্যতে সে একজন প্রকৌশলী হতে চায় — যেন গড়ে তুলতে পারে নিজের মতো অসংখ্য প্রতিভার পথ।
তার জীবন এক নীরব সংগ্রাম, যার গল্প হয়তো কেউ শোনেনি। বাবাকে ছোটবেলায় হারিয়েছে, মায়ের আয় দিয়ে সংসার চলে না ঠিকমতো। স্কুলে ভর্তি হওয়ার পরই সে সাহায্যের জন্য আবেদন করে। আংশিক বেতন ছাড়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে থাকে। আজও সে আমাদের বিদ্যালয়ে পড়ছে, নবম শ্রেণির ছাত্রী, ক্লাসের মেধাবীদের একজন। শিক্ষকরা বলেন, সে যেন আলোয় মোড়ানো এক নীরব আশাবাদ।
ছেলেটির নাম আমরা দিইনি, কারণ সে নিজেই নিজের পরিচয় তৈরি করেছে। মাধ্যমিক পাস করে সে ভর্তি হয়েছে মেডিকেল কলেজে। দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ের বৃত্তি ও অনুদানে পড়াশোনা করেছে। স্কুলের যে বেঞ্চে বসে স্বপ্ন দেখত, সেখানেই একদিন সে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে ফিরে এসেছিল। বলেছিল, "স্বপ্ন বড় হতে বাধা নেই, শুধু কারও একটু হাত ধরার দরকার হয়।"
এই গল্পগুলো আমাদের পথ দেখায়, আমাদের দায়বদ্ধতা মনে করিয়ে দেয়, আর আমাদের আশা জাগায় — যেন আমরা আরও অনেক 'আলোর দীপ্তি', 'স্বপ্নের পাখি' কিংবা 'নিশিথের জ্যোতি'র পাশে দাঁড়াতে পারি।